Monday, August 23, 2010

কৃষ্ণ বিবর বা ব্ল্যাক হোলস

48 comments
বিংশ শতাব্দীর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মহাকাশের ছায়াবৃত অঞ্চলগুলো সম্পর্কে বলেছেন, সেগুলো সম্ভবত কিছু কিছু বৃহৎ নক্ষত্রের ধ্বংসাবশেষ। এই অন্ধকার কালো গহ্বরগুলোকে কৃষ্ণ বিবর (Black Holes) বা কোলাপসার (Collapsars) বলে। এই কালো গহ্বরগুলোর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এত প্রবল যে, কোনো বস্তু এর মধ্যে প্রবেশ করলে আর বেরিয়ে আসতে পারে না। এমনকি আলোও না। ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী কারল স্কোয়ারগ্যাসচিল্ড মহাকাশে এই কালো গহবরগুলোর অস্তিত্ব সম্পর্কে বলেন। তিনি তত্ত্বগতভাবে প্রমাণ করেন যে, গহবরগুলো সূর্যের চেয়ে অনেক বেশি ভরসম্পন্ন নক্ষত্ররাজির ধ্বংসাবশেষ। মহাকাশের দুইটি পরস্পরের বিরোধী শক্তি সাক্ষের ফলে তারকার আকার স্বাভাবিক থাকে। এই শক্তিগুলো হলো প্রচণ্ড উত্তাপের ফলে সংঘটিত প্রসারণ শক্তি এবং প্রবল মহাকর্ষ শক্তি ফলে সংঘটিত সংকোচন শক্তি। এই দুই শক্তি নক্ষত্রের উপাদানকে প্রসারিত ও সংকুচিত করে তার স্বাভাবিক আকার বজায় রাখে। তারকাটির অস্তিত্বকালের কোনো এক অবস্থায় কেন্দ্রস্থ উত্তাপের হ্রাস প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে এর কেন্দ্রীয় জ্বালানিও শেষ হয়ে যায়। ফলে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রবল হয়। ধীরে ধীরে তারকাটি ধ্বংস হয়ে যায়। এর ফলে তারকার মধ্যস্থিত অণুকণাগুলো ভেঙে যায় ও ইলেকট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রন আলাদা হয়ে যায়। ইলেকট্রনের মধ্যস্থিত পরস্পরের প্রতি যে বিকর্ষণ তা তারকাটির সংকোচন কিছুটা কম করেই অবস্থায় তারকাটির নাম হয় হোয়াইট ডোয়ার্ফ (White Dwarf)। এইভাবে তারাটি স্বাভাবিক আকারের থেকে একশত ভাগ ছোট হয়ে যায়। কিন্তু হোয়াইট ডোয়ার্ফের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি তার স্বাভাবিক অবস্থার শক্তির থেকে ১০০০০ গুণ বৃদ্ধি পায়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাধ্যাকর্ষণের শক্তি এত বেশি বৃদ্ধি পায় যে, ইলেকট্রনের বিকর্ষণও ফলবতী হয় না। তারাটি আরো সংকুচিত হতে থাকে এবং তখন ইলেকট্রন ও প্রোটন মিলে গিয়ে নিউটনে রূপান্তরিত হয়। এই অবস্থায় তারকাটির নাম হয় নিউট্রন স্টার। এ

খন তার আকার হোয়াইট ডোয়ার্ফের চেয়ে আরো ৫০০ ভাগ ছোট হয়ে গেছে। তার মাধ্যাকর্ষণ শক্তিও মূল আকার থেকে বেড়ে গেছে। ১০০০০০০০০০০ গুণ। নিউট্রন স্টার হতে আলো নির্গত হওয়ার ফলে তার শক্তি আরো কমে যায় এবং সেটির আকার আরো ছোট হয়ে যায়। একসময় তারকাটি থেকে কোনো বিকিরণই হয় না। একে তখন ব্ল্যাক হোল বলা হয়। এই কালো বিবরগুলোর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি এত বৃদ্ধি পায় যে, যা কিছুই এর কাছে আসে তাই ধরা পড়ে। কোনো কিছুই এর থেকে বাইরে আসতে পারে না।

-শামীম রহমান রিজভী

48 comments:

Post a Comment