Sunday, August 29, 2010

পরমাণু ঘড়ি

32 comments
মানুষ সময় মাপার জন্য নানা ধরনের ঘড়ি ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু প্রাচীন যুগের ঘড়িগুলো সঠিক সময় নির্দেশ করতে পারত না। বিজ্ঞানীরা অনেক উন্নত ধরনের ঘড়ি আবিষ্কার করেছেন। এগুলো শুধু সঠিক সময় নির্দেশই করে না, এক সেকেন্ডের শতাংশ মাপতেও সক্ষম। ক'বছর আগে বিজ্ঞানীরা পরমাণু ঘড়ি নামে একটি অতি আধুনিক ঘড়ির উদ্ভাবন করেছেন। এটির আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে সময় নির্দেশক ঘড়ির জগতে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। এই পরমাণু ঘড়িগুলো এতই সঠিক সময় নির্দেশ করে যে, ৩০ হাজার বছরের মধ্যে মাত্র এক সেকেন্ড সময়ের হেরফের হয়। বর্তমানে তিন প্রকার ঘড়ির প্রচলন আছে। যান্ত্রক, বৈদ্যুতিক এবং ইলেকট্রনিক। যান্ত্রিক ঘড়ি সাধারণ স্পিংয়ের এর সাহায্যে চলে। বৈদ্যুতিক ঘড়ি চলে ক্যাটারির শক্তিতে। ইলেকট্রনিক ঘড়ির শক্তি হলো কোয়ার্টস। এসব ঘড়ি সঠিক সময় নির্দেশ করে বটে, কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে, বন্ধ হয়ে যায়, নয়তো মন্দগতি অথবা দ্রুতগতি প্রাপ্ত হয়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গৃহীত সবচেয়ে ক্ষুদ্র সময়ের একক হলো পরমাণু সেকেন্ড। এই মান অনুসারে সেকেন্ডের সময় ১৩৩ সিজিয়ামের পরমাণু কম্পন হয় ৯১৯২৬৩১৭৭০। পরমাণু দ্বারা সৃষ্ট কম্পাঙ্ক পরিমাপক পরমাণু ঘড়িতে ব্যবহার করা হয়। কম্পনের সংখ্যা গণনা করে সময় মাপা হয়। অধিকাংশ পরমাণু ঘড়িতে ১৪০০ থেকে ৪০ হাজার MHZ মাইক্রোওয়েব কম্পাঙ্ক ব্যবহার করা হয়। ১৯৪৭ সালে সর্বপ্রথম অ্যামুনিয়া পরমাণু দ্বারা সৃষ্ট কম্পাঙ্ক ব্যবহার করে পরমাণু ঘড়ি নির্মিত হয়। ১৯৪৭-এ ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যান্ডার্ডে এই ঘড়ি প্রস্তুত করা হয়। ১৯৫৫ সালে সিজিয়াম ধাতু থেকে উৎক্ষিপ্ত পরমাণু কিরণের সাহায্যে অত্যন্ত নিখুঁত একটি ঘড়ি টেডিংটনে প্রস্তুত করা হয়। এরপর বিভিন্ন প্রয়োগ শালায় ও রসায়নাগারে সিজিয়াম কিরণ চালিত পরমাণু ঘড়ি বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে প্রস্তুত হতে থাকে। সিজিয়াম ঘড়ির সিজিয়াম ধাতুটিকে আগুনে গরম করা হয়। এর ফলে সিজিয়াম কিরণ সৃষ্টি হয়ে একটি এক কোয়ার্টার্স ঘড়িতে ৫ মেগাহার্টস কম্পাঙ্ক বৃদ্ধি করে সিজিয়াম কম্পাঙ্কের সমান মান এনে বিদ্যুৎ চুম্বকীয় ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত করা হয়। ৫ মেগাওয়াট কম্পাঙ্কের কিছু অংশ অন্য একটি ঘড়িকে নিয়ন্ত্রিত করে এবং ঘড়িটি সঠিক সময় নির্দেশ করে।
শামীম রহমান রিজভী

32 comments:

Post a Comment