Wednesday, August 25, 2010

ডিমেও বিষ!

0 comments
ট্যানারীর বিষাক্ত বর্জ্য দিয়ে তৈরি পোল্ট্রি ও ফিশ ফিড দেশে আশংকাজনক হারে ক্যান্সারসহ নানা জটিল ও কঠিন রোগের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের উপর এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে। এসব খাবারের কারণে মুরগীর ডিমে অস্বাভাবিক মাত্রায় ডাই-অক্সিন মিশে যাচ্ছে-যার কারণে ভবিষ্যৎ বংশধররা জš§ নিতে পারে পঙ্গুত্ব নিয়ে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ট্যানারীতে পশুর চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে ক্যাডমিয়াম, ক্রোমি-য়াম, আর্সেনিক জিংকসহ ২৫০ ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। পরিত্যক্ত চামড়ায় উপস্থিত বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে শুধু ক্রোমিয়াম জাত ক্রোমিক এসিটেট নামক রাসায়নিক যৌগেই মানবদেহে ফুসফুস ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগ সৃষ্টিকারী কার্সিনোজেনিক পদার্থ, খাদ্য শৃংখল বিনষ্টকারী পদার্থ ও আলসার সৃষ্টিকারী ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু জাফর মাহমুদ ইত্তেফাককে বলেন, পোল্ট্রি ফিড তৈরিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ট্যানারী শিল্প মালিকরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অথবা পরিশোধন নীতিমালা মানছেন না। পোল্ট্রি ফিড তৈরিতে ব্যবহƒত ট্যানারী বর্জ্য কোন প্রকার পরিশোধন বা জীবাণুমুক্তকরণ ছাড়াই সরাসরি প্রক্রিয়াজাত করা হয়। এ ধরনের অপরিশোধিত বর্জ্য একাধারে পোল্ট্রি মুরগী এবং ডিম ও মাংসের ভোক্তার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। যার প্রত্যক্ষ কারণে স্বাভাবিকভাবেই মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে মরণব্যাধি ক্যান্সারসহ নানা রোগে। বর্তমানে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহƒত হচ্ছে ক্ষতিকর লেড সালফাইট-যাতে উপস্থিত লেড ধাতু ট্যানারী বর্জ্য দিয়ে তৈরি ফিডের মাধ্যমে মিশে যাচ্ছে মুরগীর শরীরে। এর ফলে বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুর জš§হার বেড়ে যাওয়ায় আশংকা রয়েছে।

বিএসআইএ’র (সাইন্স ল্যাবরেটরি) সাবেক পরিচালক ড. ফরমুজুল হক বলেন, পশুর চামড়ার বর্জ্য এবং মাছের শুকনো উচ্ছিষ্ট এবং হাড়গোড় দিয়ে তৈরি খাদ্য খাওয়ানো হচ্ছে ব্রয়লার এবং লেয়ার জাতের মুরগীকে। অপরিশোধিত ট্যানারীর বর্জ্য দিয়ে তৈরি পোল্ট্রি ফিড গ্রহণকারী পাখি, মুরগী অথবা মাছের মাধ্যমে মানুষের জিনের মধ্যে ক্যান্সারের আক্রমণ হচ্ছে। যেহেতু বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে এবং মানুষের খাদ্য চাহিদার বিপরীতে যোগানও দিতে পারছে। তাই এই সম্ভাবনাময় খাতটির উপর নির্ভরশীল ভোক্তার জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করেই ট্যানারীর বিষাক্ত বর্জ্য দিয়ে পোল্ট্রি ফিড তৈরি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, হাজারীবাগের ট্যানারী শিল্প রাজধানীর ও আশপাশ এলাকার পরিবেশ ভয়াবহ দূষণ করছে। হাজারীবাগ ট্যানারীর চামড়ার উচ্ছিষ্ট অংশ প্রক্রিয়াজাত করে মাছ ও মুরগীর খাবার তৈরি করা হচ্ছে। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব মাছ ও মাংস খেয়ে মানুষ ক্যান্সারসহ নানা কঠিন রোগে ভুগছে। মুরগীর ডিমও বিষক্রিয়ার আক্রান্ত হচ্ছে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হয়ে শিশুরা বিকলাঙ্গ হচ্ছে। তিনি অবিলম্বে এ বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি সরকারের প্রতি হাজারীবাগ ট্যানারীটি দ্রুত স্থানান্তরের দাবি জানান।
০০ মোহাম্মদ আবু তালেব

0 comments:

Post a Comment