Sunday, August 29, 2010

হার্ডরক ব্যান্ড ডিপ পার্পল

0 comments
হার্ডরক মিউজিকের ধরনটাই যে ব্যান্ডের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত হয়েছিল সে ব্যান্ডটি হচ্ছে ডিপ পার্পল। শুধু এটুকুই নয়, বিশ্বের রক মিউজিকের ইতিহাসে এ ব্যান্ডটির আরো বড় অবদান রয়েছে। ১৯৬৮ সালে বিখ্যাত ব্যান্ড ডিপ পার্পলের যাত্রা শুরু হয়। তখন ইংল্যান্ডের হাইফোর্ডে রাউন্ড এ ব্যাউট নামে একটি ব্যান্ড ছিল। যে ব্যান্ডে ছিলেন জন লর্ড যিনি অর্গান বাজাতেন এবং ছিলেন গিটারিস্ট রিচি ব্ল্যাকমোর। এরপর দি মেইজ নামক একটি ব্যান্ড থেকে ইয়ান পেইস নামের একজন ড্রামার রাউন্ড অ্যাবাউটে যোগ দিলেন ড্রামার হিসেবে। আর সে বছরই রিচির পরামর্শে ব্যান্ডের নাম বদলে নতুন নাম রাখা হলো ডিপ পার্পল। ১৯৬৮ সালে ডিপ পার্পলের প্রথম অ্যালবাম বের হয় যার টাইটেল ছিল 'শেডস অব ডিপ পার্পল'। এ বছরই তাদের ২য় অ্যালবাম 'দি বুক অব তালিয়েসিন'-এর কাজ শেষ হয়, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ অ্যালবামটি ইংল্যান্ডে রিলিজই পায়নি। ১৯৬৯ সালে ডিপ পার্পলের ৩য় অ্যালবামটি বের হয়। আর ঠিক এর পরপরই ভোকালিস্ট হিসেবে ইয়ান গিলান এবং গিটারিস্ট হিসেবে রজার স্লোভোর এ ব্যান্ডে যোগ দেন। এরা দু'জনেই এপিসোড-৬ নামক একটি ব্যান্ড থেকে ডিপ পার্পলে যোগ দেন। সত্তর দশকের মাঝামাঝি সময় পার্পলের পরবর্তী অ্যালবাম 'ডিপ পার্পল ইন রক' বের হয় এবং এ অ্যালবামটি দারুণ সাফল্য পায়। এর মাঝেই ডিপ পার্পলের জনপ্রিয়তা গোটা ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭১-এ রিলিজ পায় ডিপ পার্পলের পরবর্তী অ্যালবাম 'ফায়ারবল'। লেড জেপলিনের পাশাপাশি ডিপ পার্পল ও সত্তরের দশকে হার্ডরক মিউজিককে সংজ্ঞায়িত করতে শুরু করে।

১৯৭৩ সালে ডিপ পার্পলের আরেকটি অ্যালবাম বাজারে আসে। সে বছরই হঠাৎ ব্যান্ড ছেড়ে চলে যান স্লোডার ও গিলান। তাদের জায়গায় যোগ দেয় অখ্যাত ভোকালিস্ট ডেভিড কভারডেল ও বেইজিস্ট গ্লেন হিউগস। নতুন নাইন আপে ১৯৭৪ সালে ডিপ পার্পলের নতুন অ্যালবাম 'বার্ন' বের হয়। লাইন আপ চেঞ্জ হবার কোনো প্রভাব অ্যালবামটিতে পড়ে না; বরং অ্যালবামটি বিপুল সাফল্য অর্জন করে। এ বছরই ডিপ পার্পলের 'স্টর্ম ব্রিংগার' নামক অ্যালবাম বাজারে আসে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে রিচি ব্ল্যাকমোর 'ডিপ পার্পল' ছেড়ে 'রেইনবো' নামে নতুন ব্যান্ড গঠন করলেন। ব্ল্যাকমোরের মতো গিটারিস্টকে হারিয়ে ভয়াবহ সমস্যায় পড়ে গেল ডিপ পার্পল। কিন্তু টমি বেলিন ব্ল্যাক মোরের জায়গা দখল করলেন এবং ডিপ পার্পলের পরবর্তী অ্যালবাম 'কাম টেস্ট দি ব্যান্ড'ও ব্যাপক সফলতা অর্জন করে। ১৯৭৬ সালে হঠাৎ করেই ব্যান্ডটি ভেঙে দেওয়া হলো। এ বছরের ডিসেম্বরেই অতিরিক্ত মাদকাসক্তের কারণে মারা গেলেন বেলিন। এর ঠিক ৮ বছর পর ১৯৮৪ সালে পুনর্জন্ম হলে ডিপ পার্পলের মেম্বার সেই পুরনো লাইন আপের ৫ জনই। ১৯৮৪ সালের অক্টোবরে রিলিজ পেলো ডিপ পার্পলের নতুন অ্যালবাম 'পারফেক্ট স্ট্রেজারস'। ১৯৯০ সালে বের হলো নতুন অ্যালবাম 'স্লেভস অ্যান্ড মাস্টারস'। অ্যালবামটির মিউজিক ছিল নেইনবো স্টাইলের। যা ভক্তরা একদমই পছন্দ করল না। তারা গিলানকে ব্যান্ডে ফিরিয়ে আনার দাবি করল। একই দাবি তুললেন লর্ড, পেইস এবং স্লোভারও। তাই ব্ল্যাকমোর বাধ্য হলেন টার্নারকে বাদ দিয়ে গিলানকে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু তারপরও তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত। যার ফলে ১৯৯৩ সালে চিরতরে ব্ল্যাকমোরের ব্যান্ড থেকে চলে যাওয়া। তার জায়গায় নেওয়া হলো গিটারের মাস্টার জো স্যাট্রিয়ানিকে। এরপর একেবারে পাকাপাকিভাবে নেওয়া হলো 'স্ট্রিভ মোর্সকে'। মোর্সের কল্যাণেও ডিপ পার্পলের পরবর্তী অ্যালবাম 'পারপেন্ডিকুলারে' বিভিন্ন ধারার মিউজিকের সমাবেশ ঘটল। ২০০২ সালে ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের কারণে ব্যান্ড ছেড়ে দিলেন লর্ড। ব্যান্ডে এলেন আরেক কিবোর্ডিস্ট রেইনবো। পাঁচ বছর পর ২০০২ সালে ব্যানানাম নামক নতুন অ্যালবাম বের হয় ডিপ পার্পলের। এ অ্যালবামটি দারুণ প্রশংসিত হয়। এরপর ২০০৫ সালের অক্টোবরে তাদের নতুন অ্যালবাম র‌্যাপচার বের হলো। র‌্যাপচারকেই ডিপ পার্পলের সবচেয়ে প্রগ্রেসিভ অ্যালবাম হিসেবে ধরা হয়। এখনো এ ব্যান্ডটি দাপটের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে।

প্রীতম সাহা সুদীপ

0 comments:

Post a Comment