উনিশ শতকের মাঝামাঝি পর্যন্ত শুধু ওল্ড টেস্টামেন্ট, কোরআন ও গ্রিক ঐতিহাসিকদের কিছু লেখনীতে এসেরীয়দের কথা উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া এদের সম্পর্কে আর কিছু জানা যায়নি। ঊনবিংশ শতকে ক্লডিয়াস রিচ, পল বোথা ও অস্টিন লেয়ন্ডের উত্তর মেসোপটেমিয়ায় ব্যাপক খননের ফলে এ সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে রাজধানী লিনেভা ও ব্যাবিলনে নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। পল এমিলি বোথা নামে এক ফরাসি প্রত্নতত্ত্ববিদ ১৮৪২ সালে প্রাচীন লিনেভা শহরের ধ্বংসস্তূপ আবিষ্কার করেন।
১৯২৭ সালে মার্কিন প্রত্নতত্ত্ববিদদের আবিষ্কারের ফলে এসেরীয়দের কিছু নিদর্শন পাওয়া যায়। ১৯৩৩ সালে লিনেভে খনন কাজের ফলে রাজা সেনাচেরিবের (৭০৫-৬৮১ খ্রি. পূর্ব ৮৮৪-৮৫৯) প্রতিকৃতি খোদাই করা একটি স্তম্ভের শিলালিপিতে রাজার সামরিক অভিযান এবং স্থাপত্যকীর্তির উল্লেখ রয়েছে। এসব খনন কাজের ফলে নগরের দোকান, মন্দির, সরকারি ও বেসরকারি ভবনের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া যায়। এ ছাড়া কিছু সরকারি ঘোষণা ও শিল্পকলাও পাওয়া গেছে। বিভিন্ন রাজার আমলে খোদাই ও শিলালিপি থেকে রাজ্য শাসন, বিজয়াভিযানের বর্ণনা পাওয়া যায়। দ্বিতীয় সারগনের আমলে (৭২৩২-৭০৫ খ্রি.পূর্ব) ৪৩০টি পঙ্ক্তি সংবলিত একটি খোদাই লিপির সন্ধান পাওয়া গেছে। এতে সারগনের বিজয়াভিযানের মনোজ্ঞ বর্ণনা রয়েছে। তবে রাজা আসুর বানিপালের লাইব্রেরিতে প্রাপ্ত রাজকীয় চিঠিপত্র, বাণিজ্যিক দলিল, সাহিত্য, রাজকীয় ইতিহাসসহ বহু মূল্যবান মৃৎফলক আবিষ্কৃত হয়। ইরাকের খারাসাবাদে রাজা দ্বিতীয় সারগনের দরবারে প্রাপ্ত ছোট ছোট ফলকে ২৪০০ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ থেকে ৭৪৬ খ্রিস্ট পূর্বাব্দ পর্যন্ত সব এসেরীয় রাজাদের তালিকা রয়েছে। এ থেকে এসেরীয় রাজাদের ধারাবাহিক নাম পাওয়া যায়। এসরীয়দের উত্থান, রাজ্যাভিযান, নির্দয়তা, পতন সম্পর্কে ওল্ড টেস্টামেন্টে বিস্তারিত জানা যায়।
শাম্মী শিল্পী তুলতুল
0 comments:
Post a Comment