Wednesday, August 15, 2012

আওকরা মসজিদ, দিনাজপুর

0 comments
খানসামার মির্জার মাঠে অবস্থিত আড়াইশ বছরের পুরনো স্থাপত্য 'আওকরা মসজিদ'। তৎকালীন মির্জা সাহেব মসজিদটি প্রতিষ্ঠার সময় কি নাম রেখেছেন তাও কেউ বলতে পারে না। কোনো মানুষ মসজিদটির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এটির মধ্যবর্তী অংশে দাঁড়িয়ে কথা বললে এক সময় জোরে প্রতিধ্বনির সৃষ্টি হতো। তাই শুনে তারা ভাবত মসজিদটি তাদের কথার উত্তর দিচ্ছে। এ থেকে মসজিদটির নাম হয়ে যায় আওকরা মসজিদ অর্থাৎ কথা বলা মসজিদ।
এখনো মানুষ পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় শব্দ করে কথা বলে প্রতিধ্বনি শোনার আশায়। কিন্তু মসজিদের দেয়াল ফেটে গিয়ে নষ্ট হওয়ায় এবং এর গায়ে আগাছা পরিপূর্ণ হওয়ায় আগের মতো আর আওয়াজ হয় না।

মসজিদটি অযত্ন-অবহেলায় দীর্ঘকাল সংস্কারের অভাবে ধীরে ধীরে বিলীনের পথে। অথচ এটিকে সংস্কার করলে এটাও পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে পারে। উপজেলা পরিসংখ্যানের তথ্যে পাওয়া গেছে, ওই মসজিদটি প্রায় আড়াইশ বছর আগে বাংলা ১১৭২ সালে মির্জা লাল বেগ মুসলিম সম্প্রদায়ের নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। চিকন ইটে নির্মিত দেয়ালে নকশা করা মসজিদটি উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া বেলান নদীর পূর্ব ধারে মির্জার মাঠ নামক স্থানে অবস্থিত। ওই এলাকার প্রবীণ ব্যক্তিরা ধারণা করেন এক সময় মসজিদটির আশপাশে মুসলিম জনবসতি ছিল। যে কারণে এখানে ঐতিহাসিক মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল এবং ব্রিটিশ সরকারের আমলে অথবা অন্য কোনো কারণে তারা মসজিদটির আশপাশ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। ফলে এটি অযত্ন-অবহেলায় পরিত্যক্ত অবস্থায় দীর্ঘকাল পড়ে থাকে। পরবর্তীতে সংস্কারের অভাবে ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে থাকে মসজিদটি।

তবে মির্জা লাল বেগের ওই মসজিদকে ঘিরে মির্জার মাঠে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। যা পরে সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এ ছাড়াও একই স্থানে এলাকাবাসীর উদ্যোগে মির্জার মাঠ আওকরা মসজিদ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে আরও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হয়। ওই এলাকার একাধিক প্রবীণের সঙ্গে আলোচনা করেও মসজিদটিতে সর্বশেষ কত সালে নামাজ আদায় হয়েছে, তা তারা জানেন না। এলাকাবাসী দাবি করেন, এ অবস্থায়ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ কিংবা সরকারি কোনো পদক্ষেপ নিয়ে মসজিদটির সংস্কার করা হলে, এটি পর্যর্টনকেন্দ্র হিসেবে হতে পারে দেশের অন্যতম দর্শনীয় স্থান।

*রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

0 comments:

Post a Comment