Sunday, August 12, 2012

গারো

0 comments
উপকথা অনুসারে নান্তুনুপান্ত নামের একজন নারী সাগরের অতল থেকে একমুঠো মাটি এনে পৃথিবী সৃষ্টি করেছিল। সেখান থেকেই যাবতীয় সৃষ্টির শুরু। এই উপকথা তাদের মাতৃপ্রধান পরিবারের নিয়ামক। এদের পরিবারে মা-ই প্রধান, এরপর ছোট মেয়ে বা মা মনোনীত হয় অন্য কোনো মেয়ে। ছেলেরা বিয়ে করে ঘরজামাই থাকে এবং কাজ করে খায়। এ রকমই হলো গারো সম্প্রদায়ের জীবন ব্যবস্থা। গারোরা সাধারণত পাহাড়ে বাস করে। আদিতে গারোরা ছিল যাযাবর। এরা মঙ্গোলীয় বোড়ো শাখাভুক্ত। চীনাদের সঙ্গে গারোদের নৃতাত্তি্বক মিল লক্ষ করা যায়। ভারতের এবং বাংলাদেশের গারো পাহাড় এদের মূল আবাসস্থান। বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, সিলেট, গাজীপুর প্রভৃতি জেলায় গারোদের বাস রয়েছে। পাহাড়ে জুম চাষ, পশু পালন, শিকার এদের মূল পেশা। বিড়াল ছাড়া প্রায় সব প্রাণীই গারোদের খাদ্য। তারা বাঁশের চোঙায় রান্না করে খায়। গারোরা সবাই অতীতে 'সাংসারেক' নামে একটি কৃষিভিত্তিক ধর্মীয় আচার পালন করত। বর্তমানে এদের বেশির ভাগই খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী। গারোদের ভাষা অক্ষরবিহীন এবং অলিখিত। তাদের এই পাহাড়ি ভাষা প্রবাদ, প্রবচন, শোলক, ছড়া ও গানে ভরপুর। গারো সম্প্রদায়ের নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি পরিশ্রমী। নারীরা পিঠে একটি কাপড়ে সন্তানদের বেঁধে নিয়ে চলাফেরা করে।


গ্রন্থনা: তৈমুর ফারুক তুষার

0 comments:

Post a Comment