Tuesday, August 7, 2012

কলু সম্প্রদায়

0 comments
বর্তমান প্রজন্মের কাছে 'কলু সম্প্রদায়' প্রায় অপরিচিত। পাঠ্য বইয়ে 'কলুর বলদ'-এর অস্তিত্ব থাকলেও কলু সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। এই কলুরা বলদ দিয়ে টেনে কাঠের তৈরি ঘানিতে বিভিন্ন ধরনের তৈলবীজ যেমন_সরিষা, তিল, তিসি, ভেন্না, নারিকেল, সূর্যমুখী ইত্যাদি থেকে তেল তৈরি করত। এই তেল গরু, অর্থাৎ বলদ দিয়ে ঘানি টেনে তৈরি হতো; কিন্তু বলদরা কখনোই তেল খেতে পেত না। তাই কোনো কাজ করে তার ফল ভোগ করতে না পারাকে কলুর বলদের খাটুনি বলা হয়। বহুকাল ধরে এই কলুরাই দেশের মানুষের খাবার তেলের জোগান দিয়ে এসেছে। বর্তমানে বড় বড় তেল কম্পানির আধিপত্যের কারণে এই পেশাটি বিলুপ্তির পথে। হিন্দু ও মুসলমান উভয় ধর্মাবলম্বীরাই এই পেশায় যুক্ত। তবে বাংলাদেশের বেশির ভাগ কলুই মুসলমান। কলুদের প্রধানকে পরামানিক বলা হয়ে থাকে। কলুরা সব রকম ভোজ্য তেল তৈরি করে থাকে। ঘানিতে তেল তৈরির পর তৈলবীজের অবশিষ্টাংশ থেকে কলুরা 'খৈল' তৈরি করে থাকে। এই খৈল বিভিন্ন গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। ময়মনসিংহ অঞ্চলে এক শ্রেণীর কলু আছে, যারা গরুর পরিবর্তে নিজেরাই ঘানি টেনে থাকে। প্রচলিত সমাজে কলুদের সামাজিক মর্যাদা খুবই কম। কঠোর পরিশ্রমে মানুষের খাবার তেলের জোগান দিলেও কলুরা সমাজে অনেকটাই অচ্ছুৎ। এক শ্রেণীর কলুর হাতে ব্রাহ্মণ কিংবা বৈষ্ণবরা জল পর্যন্ত গ্রহণ করে না।

0 comments:

Post a Comment