Monday, August 13, 2012

সিমলা চুক্তি

0 comments
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নির্বিচারে বাঙালিদের হত্যা শুরুর মাধ্যমে একটি যুদ্ধের সূত্রপাত করে। বাঙালিরা ঐক্যবদ্ধভাবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে রুখে দাঁড়ায়। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধে পাকিস্তানিরা পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে ভারত আক্রমণের মধ্য দিয়ে প্রত্যক্ষভাবে ভারতকে যুদ্ধে যুক্ত করে। ১৯৭১-এ ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমাপ্তির মুখে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় আত্মসমর্পণ করে। যুদ্ধবন্দি হিসেবে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা দেওয়া হয় এবং ভারতের হেফাজতে নেওয়া হয়। বাংলাদেশ যুদ্ধকালীন হত্যা-ধর্ষণ-লুটপাটসহ নানা অভিযোগে এদের বিচার করতে চেয়েছিল। সেই সময়ে পাকিস্তান সরকার ভারতের হেফাজত থেকে এদের মুক্তি এবং যুদ্ধবন্দি হিসেবে পাকিস্তানি সেনাদের বিচার বন্ধ করার জন্য পাকিস্তান সরকার মরিয়া হয়ে ওঠে। অন্যদিকে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বিশ্বের কাছে শান্তিকামী জাতি হিসেবে ভারতের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন রাখতে পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল ভারতের জন্য জরুরি। ফলে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সিমলায় এক বৈঠকে মিলিত হয়ে ২৮ জুন থেকে ২ জুলাই ১৯৭২ পর্যন্ত দীর্ঘ আলোচনার পর একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তিটিই সিমলা চুক্তি নামে খ্যাত। এই চুক্তির অধীনেই ভারত সব যুদ্ধবন্দিকে বিনা বিচারে পাকিস্তানে ফেরত পাঠায়। এই চুক্তিতে ভারত ও পাকিস্তান তাদের বৈরিতার অবসান ঘটানো, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সব ক্ষেত্রে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এবং জম্মু ও কাশ্মীরে স্থিতাবস্থা স্থাপনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।
গ্রন্থনা : তৈমুর ফারুক তুষার

0 comments:

Post a Comment