জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী বিখ্যাত নারী খনা, যিনি বচন রচনার জন্যেই বেশি সমাদৃত। খনার ভবিষ্যদ্বাণীগুলোই খনার বচন নামে বহুল পরিচিত। খনার আসল নাম লীলাবতী। মনে করা হয় ৮০০ থেকে ১২০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে তাঁর আবির্ভাব হয়েছিল। কিংবদন্তি অনুসারে তিনি বাস করতেন পশ্চিমবঙ্গের চবি্বশ পরগনা জেলার বারাসাতের দেউলিয়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম ছিল অনাচার্য। অন্য একটি কিংবদন্তি অনুসারে তিনি ছিলেন সিংহলরাজের কন্যা। বিক্রমপুরের রাজা বিক্রমাদিত্যের রাজসভার প্রখ্যাত জ্যোতির্বিদ বরাহপুত্র মিহিরকে খনার স্বামীরূপে পাওয়া যায়। কথিত আছে, বরাহ তাঁর পুত্রের জন্ম কুষ্ঠি গণনা করে পুত্রের আয়ু এক বছর দেখতে পেয়ে শিশুপুত্র মিহিরকে একটি পাত্রে করে সমুদ্র জলে ভাসিয়ে দেন। পাত্রটি ভাসতে ভাসতে সিংহল দ্বীপে পৌঁছলে সিংহলরাজ শিশুটিকে লালনপালন করেন এবং পরে কন্যা খনার সঙ্গে বিয়ে দেন। খনা ও মিহির দুইজনই জ্যোতিষশাস্ত্রে দক্ষতা অর্জন করেন। মিহির একসময় বিক্রমাদিত্যের সভাসদ হন। একদিন বাবা বরাহ এবং পুত্র মিহির আকাশের তারা গণনায় সমস্যায় পড়লে খনা এ সমস্যার সমাধান দিয়ে রাজা বিক্রমাদিত্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। গণনা করে খনার দেওয়া পূর্বাভাসে রাজ্যের কৃষকরা উপকৃত হতেন বলে রাজা বিক্রমাদিত্য খনাকে দশম রত্ন হিসেবে আখ্যা দেন। রাজসভায় প্রতিপত্তি হারানোর ভয়ে প্রতিহিংসায় বরাহের আদেশে মিহির খনার জিহ্বা কেটে দেন। এর কিছুকাল পর খনার মৃত্যু হয়।
গ্রন্থনা : তৈমুর ফারুক তুষার
0 comments:
Post a Comment