সাঁওতালরা বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ আদিবাসী সম্প্রদায়। কালো বর্ণের মাঝারি দৈহিক উচ্চতার এই সাঁওতালরা রাজশাহী, রংপুর, দিনাজপুর, বগুড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় বাস করে থাকে। আদিকাল থেকে সাঁওতালরা কৃষিকাজে জড়িত। তাই কৃষিকাজই সাঁওতালদের মূল পেশা। নারী-পুরুষ সবাই জমিতে কাজ করে থাকে। সাঁওতালরা তাদের চাষাবাদের বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি নিজেরাই তৈরি করে থাকে। ভাত হলো সাঁওতালদের মূল খাবার। তবে মাছ, কাঁকড়া, মোরগ, খরগোস, গুইসাপ ইত্যাদিও সাঁওতালদের প্রিয় খাবারের তালিকায় রয়েছে। সাঁওতালদের প্রধান উপাস্য হচ্ছে সূর্য। তাঁদের ভাষায় সূর্য হলো 'সিং বোঙ্গা'। সাঁওতালরা খুবই উৎসবপ্রিয় জাতি। বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতেই তাঁরা উৎসব করে থাকে। তাঁদের বছর শুরু হয় ফাল্গুন মাসে। নববর্ষের এই মাসে তাঁরা উদ্যাপন করে 'স্যালসেই' উৎসব। সাঁওতালদের সবচেয়ে বড় উৎসবের নাম সোহরাই। পৌষ সংক্রান্তির দিন অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে উদ্যাপন করা হয় এই উৎসবটি। এই দিনে সাঁওতাল রমণীরা দলবদ্ধভাবে নৃত্য পরিবেশন করে থাকে। নাচ-গান-বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে পানাহারে অনুষ্ঠানটি হয়ে ওঠে জমজমাট। সাঁওতালদের সমাজে পুরুষের আধিপত্য কিছুটা বেশি। তবে নারীরাও বিভিন্ন কাজে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে থাকে। সাঁওতালদের মাটির ঘরের দেয়ালে নানা ধরনের কারুকার্যময় চিত্রণ নারীদের শিল্পীমনের পরিচায়ক। সাঁওতালরা ১২ গোত্রে বিভক্ত। সাধারণত একই গোত্রের ছেলেমেয়েদের মধ্যে বিয়ে নিষিদ্ধ।
গ্রন্থনা : তৈমুর ফারুক তুষার
0 comments:
Post a Comment