আশ্চর্যজনক ও অদ্ভুতুড়ে একটি শহর হলো মাচু পিচু। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ৪০০ মিটার উঁচুতে পাহাড়ের ওপর নির্মিত শহরটি বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্যের একটি। কালের বিবর্তনে শহরটি এক সময় চলে যায় লোকচক্ষুর আড়ালে। কয়েক'শ বছর অজ্ঞাত থাকার পর শহরটি ১৯০০ শতকের শুরুতে আবার এটি আবিষ্কৃত হয়। বর্তমানে পেরু নামক দেশটির কোস্কো এলাকায় ১২০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে গড়ে উঠেছিল ইনকা নামের এক প্রাচীন সভ্যতা। এই ইনকা সভ্যতারই একটি অদ্ভুদ শহর হলো মাচু পিচু। ইনকাদের ভাষায় মাচু পিচু শব্দটির মানে 'পুরনো চূড়া'। পেরুর উরুবাম্বা উপত্যকায় একটি পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত হওয়ার কারণেই বোধ হয় শহরটির নামকরণ করা হয় 'মাচু পিচু'। ধারণা করা হয়, ১৪৫০ খ্রিস্টাব্দের দিকে এই শহরটি নির্মাণ করা হয়। আধুনিক প্রযুক্তির কোনো সহায়তা ছাড়াই পাহাড়ের চূড়ায় কিভাবে এমন চমৎকার একটি শহর নির্মিত হয়েছিল, তা আজও বিস্ময়। দুঃখের বিষয় হলো, শহরটি নির্মাণের মাত্র ১০০ বছরের মধ্যেই তা জনমানবহীন হয়ে যায়। কারো কারো মতে গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয়ে শহরটির বেশির ভাগ বাসিন্দা মারা যায়। বেশির ভাগ পুরাতত্ত্ববিদের মতে, এই শহরটি ছিল ইনকা সম্রাট পাচাকুতিকের একটি অবকাশ যাপনকেন্দ্র। ১৬০০ শতকে স্প্যানিশরা ইনকা সভ্যতা আক্রমণ করে বেশির ভাগ শহর ধ্বংস করে দেয়; কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, স্প্যানিশরা মাচু পিচু শহরটিকে দেখতেই পায়নি। কয়েক শ বছর পরিত্যক্ত থাকার ফলে ঘন জঙ্গলে ঢেকে যাওয়া শহরটিকে ১৯১১ সালে মার্কিন গবেষক হাইরাম বিঙাম সবার নজরে আনেন।



0 comments:
Post a Comment