
বিশ্বের সপ্তমাশ্চর্যের একটি হলো ইতালির রোম শহরে অবস্থিত কলোসিয়াম। এটি মূলত একটি ছাদবিহীন মঞ্চ। চারতলাবিশিষ্ট অনেকটা বৃত্তাকার এই মঞ্চটি তার নির্মাণশৈলীর কারণে এখনো মানুষের বিস্ময় জাগায়। এখানে বসেই মানুষ ও প্রাণীদের নানা ধরনের খেলা, প্রদর্শনী ইত্যাদি উপভোগ করতেন তৎকালীন রোম সম্রাটরা। কলোসিয়ামে প্রায় ৫০ হাজার দর্শক একসঙ্গে বসতে পারত। বিস্ময়কর এই মঞ্চটি অনেক করুণ ও বীভৎস কাহিনীর সঙ্গে যুক্ত। এই কলোসিয়ামেই অনুষ্ঠিত হতো যোদ্ধাদের লড়াই প্রতিযোগিতা। লড়াইরত এই যোদ্ধাদের বলা হতো গ্লাডিয়েটর। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একজন গ্লাডিয়েটর আরেকজন গ্লাডিয়েটরকে ঘায়েল করার চেষ্টা করত। লড়াই করতে করতে এই গ্লাডিয়েটররা রক্তাক্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ত। গ্যালারিতে বসে এই দৃশ্য দেখে উল্লসিত হতেন সম্রাটসহ অন্য দর্শকরা। অমানবিকভাবে এমন অসংখ্য মানুষের প্রাণ হরণের সাক্ষী এই কলোসিয়াম। কলোসিয়ামটির নির্মাণকাজ শুরু হয় ৭২ খ্রিস্টাব্দে। ফেরিয়াস বংশের সম্রাট ভেসপাসিয়ান এটি নির্মাণ করেন। তিনি এটির নাম রেখেছিলেন এমফি-থিয়েটারিয়াম ফেভিয়াম। সাত বছরে তিনতলা পর্যন্ত নির্মাণ করে আকস্মিকভাবে মারা যান ভেসপাসিয়ান। পরে তাঁর ছেলে সম্রাট টাইটাস এর নির্মাণকাজ শেষ করেন। টাইটাস ফেভিয়ামের নাম পাল্টে নতুন নাম রাখেন কলোসিয়াম। পৃথিবীর নিষ্ঠুরতম সম্রাটদের একজন ছিলেন টাইটাস। তিনিই কলোসিয়ামে গ্লাডিয়েটরদের মরণপণ লড়াইয়ের সূত্রপাত করেন। প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত এই কলোসিয়ামটি অতীতের নিষ্ঠুরতা আর বিস্ময়ের সাক্ষী হয়ে এখনো রোমে দাঁড়িয়ে আছে।


0 comments:
Post a Comment