Monday, September 20, 2010

ম্যারামন্স কাভেরন্স গুহা

0 comments
গুহার সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক সেই প্রাচীন কাল থেকে। আদিম মানুষ বাস করত পাহাড়ের গুহায়। আর এখন অধিকাংশ মানুষ গুহা দর্শনে যায় পর্যটক হিসেবে। গুহা সম্পর্কে জানা গেছে কিছু চমৎকার তথ্য, যা সত্যিই আকর্ষণীয়। যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক দাসরা নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে অনেক সময় গুহাকে বেছে নিত। এরকম একটি গুহা হলো ম্যারামন্স কাভেরন্স। এটির অবস্থান মিসৌরি রাজ্যে।

নিউ মেক্সিকোর কাল্র ভাড ক্রাউন আবিষ্কারের কাহিনী বেশ চমকপ্রদ। জিম হোয়াইট নামের এক কাউবয় তার হারানো গরুর পাল খুঁজছিলেন গোধূলি বেলায়। সন্ধ্যায় সে দেখতে পেলো পাহাড়ের চূড়া থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসছে। পরে যখন সে গুহাটি আবিষ্কার করল, দেখা গেলো ধোঁয়া নয়, লাখ লাখ বাদুড় বেরিয়ে আসছিল গুহার ছিদ্র পথে। দূর থেকে বাদুড়ের সারিকে ধোঁয়া ভেবে ভুল করেছিলেন জিম।

অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের কিছু কিছু গুহায় আছে গ্লু-ওয়ার্ম। গুহার ছাদ থেকে এরা ঝুলিয়ে দেয় সিল্কের মতো আঠালো সুতা। স্থির তারার মতো এসব পোকা তাদের নরম আলো জ্বালিয়ে জ্বলতে থাকে গুহার ছাদে। আলোর আকর্ষণে পতঙ্গ উড়ে এসে আটকে যায় সেই সুতায়। গ্লু-ওয়ার্ম সুতায় আটক শিকার ধরে খায় নিশ্চিন্তে।

বিজ্ঞানীরা চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের কাছে এক গুহায় আদিম মানুষের কংকাল আবিষ্কার করেন। 'পিকিং মানব' হিসেবে পরিচিত এই আদিম মানুষরা বাস করত প্রায় পাঁচ লাখ বছর আগে।

ক্রোমাগনস নামে পরিচিত মানুষরা ফ্রান্স এবং ইতালিতে বাস করত প্রায় ১৫ হাজার বছর আগে। তাদের আঁকা অনেক গুহাচিত্র পাওয়া গেছে। এসব দেশের গুহার চিত্র তারা গুহার দেয়ালে এঁকেছিল, সেটা এক রহস্য। এরকম এক গুহা হলো ফ্রান্সের লাসকক্স কেভ। ভারতের অজন্তা গুহার দেয়াল চিত্রও পৃথিবীবিখ্যাত। বিভিন্ন ধরনের গুহার মধ্যে সবচেয়ে বড় ও গভীর গুহার নাম লাইম স্টোন। কেনটাকিও মেমথ গুহা এমন এক গুহা প্রণালীর অংশ যেটি তিনশ মাইলেরই বেশি লম্বা।

গুহার ভিতরে কি প্রাণের কোনো অস্তিত্ব নেই? সূর্যালোকের সাহায্যে খাবার তৈরি করে এমন কোনো গাছপালা খুঁজে পাওয়া যায় না গুহার ভিতরে। অন্ধকারে বাঁচতে পারে না এসব গাছ-লতা। তবে ব্যাকটেরিয়া আর ফাংগাস বাঁচতে পারে ভালোভাবেই। গুহার ভিতরে বসবাসকারী জীবজন্তুকে ভাগ করা যায় তিন ভাগে। কোনো কোনো প্রাণী তাদের সারাজীবনই গুহার ভিতরে কাটিয়ে দেয়। কিছু প্রকার মাছ, পোকামাকড়ও এই দলে। এদের বলা হয় ট্রাগলোবাইটস। এরা সাধারণত অন্ধ হয়ে থাকে। আবার কিছু প্রাণী তাদের জীবনের কিছু অংশ গুহার ভিতরে কাটায়। শীতের প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে বা ঘুমানোর জন্য এরা গুহার ভিতরে আশ্রয় নেয়। এদের বলা হয় ট্রাগুলোকজেনস। বাদুড় হচ্ছে এই ধরনের প্রাণী। এছাড়া এই দলে আছে ভালুক রেকুন আর বিড়ালের নাম। আর তৃতীয় দলে আছে এমন কিছু প্রাণী যাদের আজীবন বাস গুহার ভিতরে। আবার স্বজাতিদের পাওয়া যায় বাইরেও। এদের নাম ট্রগলোফাইলস। টিকটিকি, ঝিঁ ঝিঁ পোকা আর গোবরে পোকা এই দলে।

0 comments:

Post a Comment