Monday, September 27, 2010

লেক সাকার্স, ধানমণ্ডি

0 comments
সবুজের সমারোহ দেখে নিজেকে একটুখানি প্রশান্তির ছোঁয়া দিতে মন চায় কোথাও হারিয়ে যেতে। সে রকম একটি স্থান লেক সাকার্স। ধানমণ্ডির কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠেছে এই পার্কটি। শ্রমকান্ত মানুষ আর স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিরা সকালে কিংবা বিকেলে ছুটে যান প্রিয় লেক সার্কাসটিতে। কোলাহলমুক্ত, শান্ত নিবীর সবুজ পরিবেশ। পাখিদের কিচির-মিচির মুখরিত চারপাশ। বৈচিত্র্য সব মানুষের আনাগোনা। মনটাকে একদম অন্যকরম এক ভালোলাগায় পরিপূর্ণ করে দেয়। ক্ষনিকের জন্য হলেও ভুলে থাকা যায় নগরজীবনের যন্ত্রণা, হাজার সমস্যা আর দানবতুল্য ভীতিকর যানজটাকে। সকালে ব্যায়ামের পার্ক আর বিকালে প্রেমোদ্যান হিসেবে সুপরিচিত ধানমন্ডির লেক সার্কাস। স্বয়ংসম্পূর্ণ আর পরিচ্ছন্ন এমন পার্ক এই ঢাকাতে আর সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না। রোদেও সমস্যা নেই গাছের ছায়া আছে, বৃষ্টিতে সমস্যা নেই, আছে বাহারি ডিজাইনের করিডোর এবং ছাউনি। হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ে বিভিন্ন ধরনের রেস্তোরা। এই রেস্তোরাঁগুলো যেমন দর্শনার্থীদের উপকার করছে, তেমনি বৃদ্ধি করছে পার্কটির সৌন্দর্য্য। আর লেকের ওপর বেশকিছু লোহার পুল আরও বৈচিত্র্যতা দিয়েছে পার্কটিকে। সকাল, বিকাল, সন্ধ্যা যেকোনো সময়টাটেই আনন্দে, প্রশান্তিতে ভেসে যাবার মতো স্থান ধানমন্ডি লেক সার্কাস। এখানে বুড়োবুড়ি আসে কাক-ডাকা সকালে; একটু হাঁটাহাঁটি আর শরীচর্চা করে নিজেকে আর কিছুদিন টিকিয়ে রাখার আশায়। এখানে কিশোর যুবারা আসে দলবেঁধে আড্ডায় মেতে উঠতে। শিশুরাও চলে আসো বাবা-মা কিংবা বিভিন্ন অভিভাবকদের হাতের আঙুল ধরে লেকের সৌন্দর্যে মাতোয়ারা হয়ে চাঞ্চলতা আর দুষ্টামির মহড়া দিতে। দেখা যায় কেউ একা নীরবে বসে জরুরি কোনো পড়া তৈরি করে নিচ্ছেন সুন্দর পরিবেশের সান্নিধ্যে। বিশেষ করে পার্কটিতে যারা ব্যায়াম করতে আসে তাদের বেলায় কথাটা দারুণ সত্যি। এখানে ব্যায়ামের সংগঠন আছে। এরা পার্কটির নানা স্থানে স্থাপন করেছে শরীরচর্চার নানা যন্ত্র আর আইটেম। আছে ব্যায়ামাগার এবং সকলে মিলে পছন্দ করা একজন শরীরচর্চা প্রশিক্ষক। তরুণ-তরুণী, যুবক-যবতীরা এলেও, ব্যায়ামের নেশায় বেশি আসেন পঞ্চাশোর্ধ মানুষেরা। এক এক করে ব্যায়ামের সকালে আইটেম শেষ করে বিদায় বেলায় কোলাকুলি করেন সবাই। কুশলাদি বিনিময় করেন। কথা হয় কখনও কখনও ব্যক্তিগত সুখ দুঃখ নিয়ে। এভাবেই লেক সার্কাস সম্পর্কেরও জš§ হয়। ব্যায়ামের পাশাপাশি এখানে রয়েছে ডায়াবেটিস কন্ট্রোলের এবং রক্তচাপ মাপার মেশিন। এছাড়াও লেকটির অপূর্ব এবং জনপ্রিয় একটি স্থান রবীন্দ্র সরোবর। পার্কটিতে যাওয়া হলে সহজে কেউ ওই স্থানে একটু না বসে কিংবা না হেঁটে আসতে চান না। প্রকৃতিও যেন সেখানে নিজেকে অনেক বেশি মোহনীয় করেই সাজিয়েছে। সাধারণত পার্কটিতে ঘুরতে, বেড়াতে কিংবা ব্যায়ামের জন্য নিয়মিত আসেন ধানমন্ডি, কলাগাবান, গ্রিনরোড, ঝিগাতলা, মোহাম্মদপুর এলাকাবাসীরা। তবে আশপাশের অন্য এলাকার লোকজন মাঝে মধ্যে এসে থাকেন।
Source: Ittefaq

0 comments:

Post a Comment