Friday, September 17, 2010

বগুড়া

0 comments
ইতিহাসের নীরব সাক্ষী প্রাচীন বাংলার রাজধানী, ধ্বংসপ্রাপ্ত মৌর্য ও গুপ্ত সাম্রাজ্যের স্মৃতিভূমি, পুণ্ড্রনগর-সমৃদ্ধ, করতোয়া-ইছামতি নদী-বিধৌত শস্য-শ্যামল ছায়াঘেরা, পাখি-ডাকা নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি, উত্তরবঙ্গের শিল্পনগরী হিসেবে পরিচিত জেলাটি হচ্ছে বগুড়া। জেলাটি রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত।

নামকরণের ইতিহাস

বগুড়ার নামকরণ করা হয়েছে বলবন আমলে বাংলার শাসক নাসির উদ্দীন বুগরা খানের নামানুসারে। বুগরা খান ছিলেন দিল্লীর সুলতান গিয়াস উদ্দীন বলবনের কনিষ্ঠ পুত্র এবং স্বাধীন বঙ্গের শাসনকর্তা।

আয়তন ও অবস্থান

আয়তনের ভিত্তিতে বগুড়া জেলা বাংলাদেশের ১৮তম বৃহত্তম জেলা। জেলার মোট আয়তন ২৯১৯.৯০ বর্গ কি.মিÑযা সমগ্র বাংলাদেশের মোট আয়তনের ১.৯৭%। ভৌগলিকভাবে জেলাটি ২৪০৩র্র্র্২ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ২৫০০র্৭ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৮০৫র্৮ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ থেকে ৮৯০৪র্৫ পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। জেলার উত্তরে জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা জেলা, দক্ষিণে চলনবিল, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলা, পূর্বে যমুনা নদী ও জামালপুর জেলা এবং পশ্চিমে নওগাঁ ও নাটোর জেলা অবস্থিত।

প্রশাসনিক পটভূমি

প্রাচীনকালে এ এলাকাসহ গোটা উত্তরবঙ্গ মৌর্য শাসনাধীনে পুণ্ড্রবর্ধন রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে মুসলিম শাসনামলে (১২০৪-১৩৩৮) বগুড়া অঞ্চল গৌড়ের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৭৬৫ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার দেওয়ানি লাভ করলে বগুড়া ইংরেজদের অধিকারে আসে। ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় এই জেলার অধিকাংশ স্থান রাজশাহী জেলার ও বাকি অংশ রংপুর ও দিনাজপুর জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে ১৮২১ সালে রাজশাহী জেলার ৪টি থানা (আদমদিঘী, বগুড়া, শেরপুর, নওখিল), দিনাজপুরের ৩টি থানা (লালবাজার, বাদলগাছী, ক্ষেতলাল) এবং রংপুরের ২টি থানাসহ (গোবিন্দগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ) মোট নয়টি থানা নিয়ে বগুড়া জেলা গঠিত হয়। পরবর্তীতে জেলার প্রাথমিক কাঠামো থেকে নয়টি থানা বাদ দিয়ে নতুন ৭টি থানা সংযোজিত করে বৃহত্তর বগুড়া জেলা সৃষ্টি হয়। বগুড়াকে পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে বগুড়া ও জয়পুরহাট জেলায় রূপান্তর করা হয়। বর্তমানে বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলা, ১০৯টি ইউনিয়ন ও ২৭০৬টি গ্রাম আছে। উপজেলাগুলো হচ্ছেÑবগুড়া সদর, শেরপুর, আদমদিঘী, নন্দীগ্রাম, শিবগঞ্জ, কাহালু, ধুনট, গাবতলী, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, দুপচাঁচিয়া ও শাহজাহানপুর।

নদ-নদী : করতোয়া, নাগর, বাংলা, ইছামতি।

জলবায়ু : বার্ষিক গড় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪.৬০ সে. এবং সর্বনিম্ন ১১.৯০ সে.। বার্ষিক বৃষ্টিপাত ১৬১০ মি.মি.।

দর্শনীয় স্থানসমূহ

খেরুয়া মসজিদ (শেরপুর), মহাস্থানগড়ের ঐতিহাসিক ধ্বংসাবশেষসমূহ, বড় মসজিদ, শাহ সুলতান বলবীর মাজার, গোকুল মেঠ, পশুরামের প্রাসাদ, বাসুবিহার, কারুপল্লী, মোহাম্মদ আলী নবাব প্যালেস, এডওয়ার্ড পার্ক, জৈনমন্দির ইত্যাদি।

যোগাযোগ ব্যবস্থা

ঢাকা থেকে রংপুর ও দিনাজপুরগামী যে কোনো বাসে কিংবা সরাসরি বগুড়ার বাসে বগুড়া যাওয়া যায়। উল্লেখযোগ্য পরিবহনের মধ্যে রয়েছে এসআর, শ্যামলী, হানিফ, গ্রীনলাইন, কেয়া, একতা, টিআর, আগমনী ইত্যাদি। বগুড়া যেতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘন্টা।
০০ এস এম রাজু ০০

0 comments:

Post a Comment